স্বদেশ ডেস্ক:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় ও পুলিশের হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে নগ্নপায়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খান।
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্ত্বরে তিনি এ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তিনি ক্লাস নেয়া থেকে বিরত ছিলেন এবং আহত শিক্ষার্থীদের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানান।
অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর এই পৈশাচিক হামলায় একজন অভিভাবক হিসেবে আমি শঙ্কিত, ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত। আমার ছাত্রের রক্তের দাগ এখনো মুছেনি, শরীরের ব্যথা এখনো কমেনি, শরীরের ব্যান্ডেজ এখনো খোলেনি, সেলায় এখনো কাটেনি, হাসপাতাল থেকে এখনো ছাড়েনি। এই অবস্থায় আমি তাদের ক্লাস নিতে পারি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। তাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় হাসপাতালে আছে। অনেককে আবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আমার শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তাই আমি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও তাদের ওপর হামলার প্রতিবাদস্বরূপ এখানে নগ্নপায়ে দাঁড়িয়েছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর অন্যায় অবিচার করা হয়েছে। প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হবে কিনা আমার জানা নেই। তাই আমি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষন করে আজ এখানে দাড়িয়েছি।’
এ সময় তার সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো: হাবিব রেজা বলেন, ‘আমরা এখানে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে দাঁড়িয়েছি। আমাদের ওপর অন্যায় করা হয়েছে। আমাদের ভাইদের ওপর স্থানীয়রা যে আক্রমণ করেছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীদের ইন্ধনে এমন সংঘর্ষ হয়েছে। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না করলে আমরা আরো কঠোর অবস্থানে যাব।’
এর আগে সোমবার ড. ফরিদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন ’রাবি শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয় সন্ত্রাসী ও পুলিশের ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে আগামীকাল ক্লাস নেয়া থেকে বিরত থাকব। আহত শিক্ষার্থীদের প্রতি সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাতে জোহা চত্ত্বরে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত নগ্নপায়ে দাঁড়িয়ে অবস্থান করবো।’
উল্লেখ্য, বগুড়া থেকে মোহাম্মাদ নামের একটি বাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন এক ছাত্র। যাত্রাপথে ভাড়া নিয়ে তার সাথে বাসের সুপারভাইজার ও হেলপারের তর্ক-বির্তক হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে বাসটির কাউন্টারে
এসে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে স্থানীয়দের সাথে কথা-কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।